লেখকঃ মাওলানা বাকী বিল্লাহ।
খতিব শাহ জাব্বারিয়া জামে মসজিদ চকরিয়া।
“আজকের শিশু কালকের ভবিষ্যৎ। আর এই ভবিষ্যৎ গড়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হলেন বাবা-মা। সন্তানের সঠিক তারবিয়াহ শুধুমাত্র ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো বা পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তার চারিত্রিক গঠন, নৈতিক শিক্ষা ও ভালো-মন্দের বোধ তৈরি করা।সন্তান গড়ার পথচলায় বাবা-মায়ের করণীয়ঃ
১. সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলুন:
শুধু আদেশ-নিষেধ নয়, সন্তানের সঙ্গে একান্তে সময় কাটান। তার অনুভূতি শুনুন, চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। এতে সে অনুভব করবে আপনি তার আপনজন, ভরসার স্থান।
২. ভালোবাসা ও শৃঙ্খলার ভারসাম্য রাখুন:
একদিকে সীমাহীন ভালোবাসা, অন্যদিকে প্রয়োজনীয় শৃঙ্খলা—দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। খুব বেশি শাসন যেমন ক্ষতি করে, তেমনি অতিরিক্ত ছাড়ও সন্তানের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
৩. ইসলামী মূল্যবোধ শেখান:
আল্লাহভীতি, আমানতদারি, সততা, সহমর্মিতা, বড়দের সম্মান, ছোটদের স্নেহ—এই গুণগুলো ছোটবেলা থেকেই শেখানো জরুরি। নিজের আচরণের মাধ্যমে এই মূল্যবোধগুলো শেখানো সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।
৪. পরিমিত স্ক্রিন টাইম ও টাইম ম্যানেজমেন্ট :
শিশুদের হাতে মোবাইল তুলে দেওয়ার আগে ভাবুন—এটা কি তাকে জ্ঞানী বানাচ্ছে, না কেড়ে নিচ্ছে তার শৈশব? খেলাধুলা, বই পড়া, পারিবারিক সময়—এসবের গুরুত্ব তাকে বোঝান।
৫. নিজের চরিত্র গড়ুন:
বাবা-মা যেমন হবেন, সন্তানও ধীরে ধীরে তাই হতে শেখে। আপনি যদি সময়নিষ্ঠ হন, কোমলভাষী হন, সালাত কায়েম করেন, মিথ্যা না বলেন—সন্তান নিজের অজান্তেই তা রপ্ত করবে।
সন্তান আমাদের হাতে আমানত। আমরা তাকে যেমন করে গড়ে তুলবো, সে-ই আমাদের জন্য দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতে নাজাতের কারণ হতে পারে, আবার উল্টোও হতে পারে। তাই সন্তানকে সময় দিন, দোয়া করুন, সঠিক দিকনির্দেশনা দিন—আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন।